Tuesday, June 23, 2020

বনকাটি - আ জুয়েল ইন দ্যা ক্রাউন।

বনকাটি - আ জুয়েল ইন দ্যা ক্রাউন।

বনকাটির কালীতলার দুটি আটচালা ও তিনটি দেউল, ছবি-লেখক।
পশ্চিম বর্ধমান জেলার কাঁকসা ব্লকের অন্তর্ভুক্ত, প্রায় অজয় নদের ধারে একটি ছোট্ট গ্রাম বনকাটি। কাঁকসা নামটি সম্ভবত এসেছে জনৈক রাজা কঙ্ক সেন বা কনক সেন থেকে। আর বন কেটে বসত বলে নাম তার বনকাটি। বনকাটির এই অংশের প্রাচীন নাম অবশ্য সেন-পাহাড়ি, অতীতে কিন্তু দু দুটি সেন রাজবংশের নাম এই স্থানের সঙ্গে যুক্ত ছিল- ১) বাংলার সেন রাজাদের  বিশেষ করে রাজা লক্ষণ সেনের সময় থেকেই নাকি সেনপাহাড়ি নামকরণ , ২) অনেক পরে বর্ধমানের রাজা চিত্রসেন এই অঞ্চলের কিছু সংস্কার সাধন করেন।

পশ্চিবঙ্গের বাঁকুড়া, বীরভূম, পুরুলিয়া এবং অজয় নদের গা ঘেঁষা বর্ধমান জেলার মাটির রং লাল। লাল রঙের ল্যাটেরাইট গোত্রের  মাটি পুড়িয়েই তৈরি হত টেরাকোটার মূর্তি ও প্লেট। এই অঞ্চলগুলোতে প্রচুর টেরাকোটার কাজ সমৃদ্ধ সুন্দর মন্দির আছে যা বাঙালি জাতির সহজাত অজ্ঞতা এবং আপন সংস্কৃতির ওপর উন্নাসিক ব্যাবহারে হারিয়ে যাচ্ছে। ১৭ ও ১৮ শতকে এই সব পোড়ামাটির মন্দির তৎকালীন কুম্ভকার ও কর্মকাররা কি অসম্ভব দক্ষতায় তৈরি করেছিলেন, তা এসব প্রায় ধ্বংস প্রাপ্ত মন্দিরের  ইঁটের এবং পোড়ামাটির টালির কাজ দেখলে বোঝা যায়। কি নেই এসব মন্দির ভাস্কর্যে ? পুরান থেকে আধুনিক ইংরেজ রাজত্ব, নৌবিহার থেকে শিকার, যুদ্ধ বিগ্রহ থেকে দৈনন্দিন জীবন সংগ্রাম, সবকিছুই দেখা যায় এইসব টেরাকোটা প্যানেলের মধ্যে। বলা যায় সেযুগের সমাজ জীবনের জীবন্ত দলিল এই সব পোড়ামাটির কাজগুলি।

টেরাকোটার মহিষমর্দিনী ফলক বনকাটি, ছবি- লেখক
বন কাটির রথের মেলা ২০১৯, ছবি লেখক ।
রথের মেলায় এসেছি এই গ্রামের প্রাক্তন জমিদার এবং ইংরেজ আমলে গালার ব্যাবসা করে তৎকালিন সর্বাধিক ধনী ব্যক্তি রামপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় প্রতিষ্টিত পঞ্চরত্ন গোপালেশ্বর শিব মন্দির এবং উনার বাসস্থান দেখতে। বনকাটি তে থিতু হবার আগে ইনারা ছিলেন নিকটবর্তী বসুধা গ্রামের পূজারী ব্রাহ্মণ।
বন কাটির রথের মেলা ২০১৯, ছবি লেখক ।
বন কাটির রথের মেলা ২০১৯, ছবি লেখক ।
বন কাটির রথের মেলা ২০১৯, ছবি লেখক ।
রত্ন বলে রত্ন ! এই মন্দিরটি এবং মন্দিরের পাশেই রাখা একটি পিতলের অসম্ভব সুন্দর রথ দেখে তো স্পেল বাউন্ড । এ কি ঐশ্বর্য দেখছি চর্ম চক্ষে ! অবিশ্বাস্য।
মন্দিরের গায়ের ফলকের লেখা দেখে জানা গেল যে এই পঞ্চরত্ন মন্দিরটি নির্মিত ১৭৫৪ শকাব্দে বা ১৮৩২ খ্রিস্টাব্দে অর্থাৎ আজ থেকে ১৮৮  বছর আগে।

বন কাটির পঞ্চরত্ন মন্দির।
কাল স্রোতে ভেসে যায় জীবন- যৌবন- ধন-মান। আজ রামপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের বিশাল অট্টালিকা বার্ধক্যে জরাজীর্ণ, ছাদ খসে পড়েছে। কোনোরকমে অট্টালিকার গুটি কয়েক দেওয়াল ও বিশাল বিশাল স্তম্ভ, বটগাছের ঝুঁড়ি আঁকড়ে বাঁচতে চাইছে। সামনের পঞ্চরত্ন মন্দিরের পিছনেই জমিদারের ভাঙা অট্টালিকা। খোলা জানালার মধ্যে দিয়ে বয়ে চলা হাওয়া এক আধিভৌতিক স্বর বয়ে আনছে। মেহের আলীর মতন যেন বলছে-তফাৎ যাও, সব ঝুট হায় !

রামপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের বিশাল অট্টালিকা। ছবি-লেখক।
অবশ্য পঞ্চরত্ন মন্দিরটি সেই তুলনায় কম ক্ষয়প্রাপ্ত, মন্দিরের মধ্যে আছে এক বৃহৎ শিবলিঙ্গ । যদিও এর দেওয়ালেরও অনেক টেরাকোটা টালির ফলক খসে পড়েছে বা ভেঙে গেছে। তবু এখনও যা আছে, তাতেই চোখ ঝলসে যায়।

দশমহাবিদ্যার প্যানেল। ছবি- লেখক

রাজা রামের রাজসভা। ছবি- লেখক
প্রথমেই চোখ যায় দরজার খিলানের উপরে শুক সারী, দুই দিকে দুই রথ, ডাইনে পাঁচ চূড়ার, বাঁয়ে তিন চূড়ার। রথের ওপরের প্যানেলেই আছে রাজা রামের রাজসভা।রামের মাথায় রাজছত্র, পাশে সীতা দেবী।বিভিন্ন সভাসদ এবং অনুচরদের মধ্যে রাম ভক্ত বানরেরাও আছে।
দেবী দুর্গার টেরাকোটার মূর্তিটি দেখে চোখ জুড়িয়ে গেল।অনেক ওপরে রাজা দশানন অবস্থান করছেন।মন্দিরের ভূমিসংলগ্ন টেরাকোটার প্যানেল গুলি অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য এই কারণেই যে-এখানে দেবীর দশমহাবিদ্যার অনেক রূপ স্থান পেয়েছে।

ইংরেজ যুগের টমটম গাড়ি, ছবি- লেখক।

নৌকা বিলাস, টেরাকোটার ফলক, বনকাটি।
এই পঞ্চরত্ন মন্দিরে, আরো কত যে টেরাকোটার মূর্তি আছে তা গুনে শেষ করা যাবে না।রামায়ণ, মহাভারত, পুরান থেকে ইংরেজ আমলের টমটম গাড়ি, নৌকাবিলাস -কোন কিছু বাদ নেই। 
 বনকাটি গ্রামের জমিদার মুখোপাধ্যায় পরিবারের টেরাকোটার পঞ্চরত্ন মন্দিরের পাশেই একটি টিনের চালার নিচে রাখা এক বিস্ময়কর পিতলের রথের দিকে আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি ।এত বড় সম্পূর্ণ পিতল নির্মিত অসাধারণ শৈল্পিক ও দৃষ্টিনন্দন রথ সচরাচর দেখা যায় না।চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা শক্ত কি অপূর্ব এই সম্পদটি।

২০১৯ এর রথের দিন, পিতলের রথের সাজ।

২০১৯ এর রথের দিন, পিতলের রথের সাজ।
পিতলের রথের কাজ, নর-সিংহ অবতার।
গাজনের বাজনা বাজা, বনকাটি পিতলের রথ।

বড়লোকের গিন্নি, ছবি- লেখক
বাংলা ১২৪১ সালে বনকাঠি গ্রামের জমিদার মুখোপাধ্যায় পরিবারের জনৈক সদস্য শশী ভূষণ মুখোপাধ্যায় , উনাদের পারিবারিক পঞ্চরত্ন শিব মন্দিরের অনুকরণে এই পাঁচ চূড়ার পিতলের রথ তৈরি শুরু করেন।যার নির্মাণ শেষ হয় ১২৪২ সালে। ঠাকুরও আছেন পিতলের তৈরি, আছে সোনা রুপার গহনা, মুকুট ইত্যাদি।একটি রথযাত্রা কমিটি রথের দিনের সমস্ত কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণ করে। জানা গেল যে এই রথ নির্মাণের জন্য সেই সময় উড়িষ্যা থেকে শিল্পীরা এসেছিলেন।

 বাঙালিরা এসব জায়গায় না এলে কি হবে, কোন অতীতে নন্দলাল বোস এসেছিলেন কলা ভবনের ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে এখানে। বিশ্ব বিখ্যাত ড্রাই পয়েন্ট এচিং শিল্পী এবং গভর্মেন্ট স্কুল অফ আর্টস এর প্রথম ভারতীয় অধ্যক্ষ শ্রদ্ধেয় মুকুল দে মহাশয়(১৮৯৫-১৯৮৯) প্রায় সত্তর বছর আগে বনকাঠি গ্রামে এসেছিলেন এবং এখানকার পোড়ামাটির কাজ এবং পিতলের রথ দেখে মুগ্ধ হয়ে হয়েছিলেন।
কিন্তু উপেক্ষিত বনকাঠি লোকচক্ষুর অন্তরালেই রয়ে গেছে। জানিনা বাঙালিরা নিজেদের ঐতিহ্য নিয়ে এত উদাসিন কেন !

রথের দুই দিকেই মহাবীর গরুড়ের দুটি মূর্তি। রথের চার দেওয়াল এ যে কত অলংকরণ- গুনে শেষ করা যায়না। পুরান, মহাভারতের কথা, রামায়ণের চরিত্র এসব তো আছেই।এছাড়াও সে যুগের সমাজের অনেক দৃশ্যাঙ্কন আছে।যেমন সম্ভ্রান্ত ঘরের মহিলার ছবি আছে, তেমনি আছে গরীব ঘরের মেয়ের মাদারির খেলা দেখানো বা মাথায় ঝুড়ি নিয়ে ফেরিউলি ।আবার ধনবান শ্রেষ্ঠীও আছেন এই ছবিতে।এমন কি বাংলার এই অঞ্চলে মন্দির গাত্রে বা রথে যে ছবি সচরাচর দেখা যায় না, সেরকম দুটি মৈথুন মূর্তিও এর গায়ে অঙ্কিত।
সুতরাং এটি শুধুমাত্র কোনো একটি রথ নয়,  যেন সে যুগের ভারতীয় সভ্যতা ও ভারতাত্মার এক চমৎকার ডকুমেন্টেশন।


এরকম পিতলের রথের উদাহরণ খুব বেশী জানা নেই।শ্রদ্ধেয় তারাপদ সাঁতরা মহাশয় ১৩৭৭ বঙ্গাব্দের 'সাহিত্য পত্র' পত্রিকায় বর্ষা সংকলন সংখ্যায় পশ্চিমবঙ্গে সর্বমোট ৪১টি পিতলের রথের সন্ধান পেয়েছেন, যার মধ্যে বনকাটির রথই প্রাচীনতম।শ্রী অমিয় কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ' দেখা হয় নাই' গ্রন্থের ১৪৫ নম্বর পৃষ্ঠে মন্তব্য করেছেন " বনকাটির রথটি আকারে মাঝারি, উচ্চতা অনধিক ১৫ ফুট, একতলার দৈর্ঘ্য প্রস্ত ৬'৫", দোতলার ৪'৫"। কিন্তু খোদাই কাজের প্রাচুর্য এবং সাবলীলতায় এটিই যে এ দলে সর্বশ্রেষ্ঠ তাতে সন্দেহ মাত্র নেই।"
সুতরাং রূপের গরবে গরবিনি বলতে বঙ্গদেশে এই বনকাঠির রথই বোঝায়। 
রথের মেলায় বড় প্রাপ্তি এখানকার মাস্টারমশাই প্রণব ভট্টাচার্যের সাহচর্য এবং একটি চমৎকার গ্রামীন মেলার ফ্লেভার। পাঁপড় ভাজা , আলুর চপ, ঘুগনি বা গ্রামীণ মিষ্টি তো আছেই। বিশাল বিশাল খাঁজা কাঁঠাল বিক্রি এই মেলার অন্যতম বিশেষত্ব। 

কি অফুরন্ত রত্ন ভান্ডার লুকিয়ে আছে এই বিস্মৃত প্রায় বনকাটি গ্রামের আনাচে কানাচে তা প্রত্যক্ষ করতে হলে একদিন ঘুরে যান এখানে।জাতীয় সড়ক ২ - ধরে এসে, দার্জিলিং মোড় থেকে ডানদিকে ঘুরে পানাগর-মোড়গ্রাম হাইওয়ে ধরুন, নেমে যান ইলামবাজার এর কিছু আগে এগারো মাইল স্টপেজে।
শান্তিনিকেতন থেকে এলে, ইলামবাজার পার করে এগারো মাইলে নামুন।সেখান থেকে খুব কাছেই অযোধ্যা এবং বনকাটি গ্রাম। মোড় থেকে রিকশা বা ভ্যান পাবেন।
আটচালা মন্দির, কালীতলা, বনকাটি ।
ভগ্ন দেউল , বনকাটি ।

আরেকটা পথ হচ্ছে জয়দেব ঘাট এবং অজয় নদ পেরিয়ে বাঁদিকে ঘুরে গৌরাঙ্গপুর- ইছাই ঘোষের দেউল হয়ে বনকাটি যাওয়া।আসানসোল/ দুর্গাপুর থেকে এলে মুচিপাড়ায়, কল্পনা ইন এর পাশে জয়দেব যাবার রাস্তা ধরে, গৌরাঙ্গপুর /ইছাই ঘোষের দেউল হয়ে যেতে পারেন। জয়দেব যাবার রাস্তা ধরলে অধিক প্রাপ্তি হবে ইছাই ঘোষের দেউল দর্শন, উপরন্তু দুর্গাপুর টোল প্লাজার যানজট এবং অসম্ভব বেশি সড়ক দর্শনী বাদ যাবে।
কালীতলা, বনকাটি ।
গাছ গাছালিতে ঢাকা পায়ে চলার পথ দিয়ে চলেছি বনকাটি দর্শনে।প্রথম স্থানটির নাম কালিতলা।রাস্তায় পড়লো ঘন জঙ্গলের মধ্যে স্থানীয় মুখোপাধ্যায় বংশের প্রতিষ্টিত একটি পরিত্যক্ত আটচালা।পরিত্যক্ত হলেও এখনও বেশ ভালো অবস্থা তেই আছে সেটি। সেখান থেকে সামান্য কিছুদুরেই কালীতলা। নাম থেকেই বুঝতে পারছেন, এখানে একটি কালী মন্দির আছে। এই মন্দিরে সারা গ্রামের লোক পুজো দেন। প্রাচীন কালের বলির পাথরের বিশাল হাঁড়িকাঠটি দেখে ভয় লাগে। কালী মন্দিরের প্রতিষ্টাতা জনৈক লক্ষ্মীকান্ত রায়।

কালীতলার একদিকে তিনটি রেখ দেউল এবং এর উল্টোদিকে দুটি প্রাচীন আটচালার মন্দির অবস্থিত। উত্তরমুখো দুটি আটচালার মধ্যে বাঁ দিকের প্রথম মন্দিরটির দরজার খিলানের উপরে চমৎকার দুর্গা প্যানেল,এটির নির্মাণ ১৭০৪ শকাব্দে(বা এর সঙ্গে ৭৮ যোগ করলে হবে ১৭৮২ খ্রিস্টাব্দে) এবং ডানদিকের অন্য মন্দিরটির  নির্মাণ ও ১৭০৪ শকাব্দে(১৭৮২ খ্রিস্টাব্দে) । এই মন্দিরের দরজার খিলানের উপরে চমৎকার গনেশ মূর্তি দেখা যায়।
রেখা দেউল গুলি ১৭৫৬ শকাব্দে( বা ১৮৩৪ খ্রিস্টাব্দে) নির্মিত অর্থাৎ ১৮৫ বছরের প্রাচীন।এখানে প্রথম মন্দিরটির দরজার উপরের প্যানেলে মা কালী বিদ্যমান। পরের টির মাথার উপরে মা দুর্গা এবং তৃতীয়  টির  ওপরে বিদ্যমান মা ত্রিপুরাসুন্দরী ।


রথের দিন- ২০১৯, বনকাটি ।

আরো দুটি সম্পূর্ণ ধ্বংস প্রাপ্ত দেউল চোখে পড়লো। মাথা অবধি ঢাকা আগাছায় । জানা গেল এই ভাঙা দেউলের মধ্যে নাকি বেশ কিছু বিষধর সাপ বাস করে, তাই কেউ ভয়ে এখানে যায়না। কোন এক মহিলা নাকি তাঁর প্রয়াত স্বামীর উদ্দেশ্যে এই জোড়া দেউল নির্মাণ করেন। এই জোড়া দেউলের পিছনেই আছে সমতল ছাদের পরিত্যক্ত বিষ্ণু মন্দির।
রথের দিনে আলাপ হয়েছিল, এই মন্দির গুলি যাঁরা তৈরি করেছিলেন সেই চট্টোপাধ্যায় বংশের বর্তমান উত্তরপুরুষ শ্রী অনিল কুমার রায়ের সঙ্গে। এই বংশের প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে ধরা হয় জনৈক তান্ত্রিক সাধক মহেশ্বরপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় কে ।
এখন উনারা রায় পদবি ব্যাবহার করেন।এক বিশাল কাঁসার রেকাবি বের করে উনি দেখিয়েছিলেন , এই রেকাবির পিছনে উনাদের বংশলতিকা লেখা আছে।ব্যাস, এই রেকাবিটাই যা এখনও বেঁচে আছে উনাদের কাছে, বাকি সমস্ত মন্দিরের বাসন কোসন ডাকাতেরা নিয়ে গেছে । অতি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা।
বনকাটি বেড়াতে এলে পাশের অযোধ্যা গ্রামের কামার পাড়ার চারটি রেখদেউল পারলে দর্শন করবেন। স্থানীয় কর্মকার পরিবার এই মন্দিরগুলো নির্মাণ করেছিলেন। আর আছে ময়রাপাড়ার পঞ্চরত্ন শিবমন্দিরের গায়ে মোহন্ত-এলোকেশীর ঘটনার টেরাকোটার ট্যাবলেট।
"তেপান্তরের পাথার পেরোই রূপকথার,
পথ ভুলে যাই দূর পারে সেই চুপকথার।"
আজ্ঞে হ্যাঁ ! বনকাটির একদম কাছেই আছে সে এক তেপান্তরের রূপকথার গ্রাম - গ্রামটির নাম সাতকাহানিয়া। জানেন কিনা জানিনা, পশ্চিম বাংলায় এটিই একমাত্র নাট্যগ্রাম। এখানকার  মাস্টার মশাই প্রণব ভট্টাচার্য এবং তাঁর সুযোগ্য পুত্র কল্লোল এর হাত ধরে স্থানীয় চাষী, বাউড়ি, বাগদি ইত্যাদি সম্প্রদায়ের  মানুষদের নিয়ে ১৯৯৪ সালে তৈরি হয় নাট্যগ্রাম তেপান্তর।

এখানে সকালে যাকে জমিতে চাষ করতে অথবা পুকুরে জাল ফেলতে দেখবেন, সন্ধ্যায় তাঁকেই  দেখবেন থিয়েটারে অভিনয় করতে। এমন অসাধারণ, অভূতপূর্ব, অভিনব সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড, বাংলার আর কোথাও হয় কিনা জানিনা।

 গ্রামীন মানুষেরাই এই নাট্যগ্রামের প্রাণ। তাঁদের মানসিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক উত্তরণের সোপান এই নাট্যগ্রাম।
সারা পৃথিবী থেকে ডাকসাঁইটে শিল্পী ও নাট্য পরিচালকেরা আসেন এখানে অনুষ্ঠান করতে, নিয়মিত সংগীত ও নাটকের ওয়ার্কশপ হয়।
সারা বছর ধরেই এখানে লোকসংস্কৃতি প্রচার ও প্রসারের উদ্দেশ্যে কর্মকান্ড চলে। দোলের সময়  হয় ৩ দিন ব্যাপি বসন্ত উৎসব।

 সে একটি দেখবার মতন ব্যাপার।  হস্ত শিল্পের দোকান, পুরুলিয়ার ছৌ, ওডিসি নৃত্য, উড়িষ্যার গুটি পোয়া নাচ, ধ্রুপদী নৃত্য, লোক নৃত্য, ঝুমুর গান, বাউল গান, আরো কত লোকগান, এলাকার আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষদের নৃত্য-গীতের অনুষ্ঠান এবং সর্বোপরি কল্লোলের নাটকের গ্ৰুপ "এবং আমরা" নাট্যদলের নাটক এবং শেষ অনুষ্ঠানে হয় আতশবাজির প্রদর্শন। সারা বাংলা ও বিদেশ থেকে এই অনুষ্ঠানে বহু বিশিষ্ট মানুষেরা যোগদান করেন। স্থানীয় মানুষের ঢল নামে মেলাতে। 

বনকাটি আসবেন আর গড়জঙ্গলের শ্যামরূপা চন্ডী এবং ইছাই ঘোষের দেউল দেখবেন না, সে আবার হয় নাকি !



শাল, শিরীষ, অর্জুন আরো কত নাম না জানা গাছগাছালিতে ঢাকা , লাল মোরামের চমৎকার  পথ দিয়ে চলেছি গড় জঙ্গল। ঝাঁকে ঝাঁকে ফিঙে, বুলবুলি আর গাছের কোটরে উঁকি দিচ্ছে টিয়ার টুকটুকে সবুজ ছানা।কোনো কোনো জায়গায় ভর দুপুরেও সূর্যরশ্মির প্রবেশ নিষেধ। বেশ একটা রোমাঞ্চকর আলো আঁধারীর পরিবেশে পৌঁছলাম সামান্য দূরের মেধা মুনির পৌরাণিক কাহিনী আশ্রিত আশ্রমে। সাধুবাবারা রক্তবর্ণের আভরণ ও টিকা নিয়ে ব্যাস্ত পুজোর আয়োজনে।বর্তমান মন্দিরের পেছনেই আদি মেধা মুনির আশ্রমের খণ্ডহর।সেখান থেকে সামান্য দূরেই এক অতি প্রাচীন ঢিবি। বোর্ডে লেখা আছে এখানেই রাজা সুরথ ও সমাধি বৈশ্য  মার্কণ্ডেও পুরান অনুসারে প্রথম দুর্গা পুজো করেন। অবশ্য এর সত্যাসত্য নিয়ে কিছু বলা সম্ভব নয়, কারণ এটি বিশ্বাস ও ভক্তি দিয়ে, পুরান কথা অনুসারে , মেধাশ্রমে সাধুদের অন্তরের বিশ্বাস। এই বিশ্বাস ও লোককথার মধ্যে ইতিহাসকে খুঁজতে না যাওয়াই ভালো।
গড় জঙ্গলের দুর্গাপুজোর একটি লোকমুখে প্রচলিত আখ্যান যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিক্ষণে নাকি সারা পাহাড় জঙ্গল কাঁপিয়ে পর পর তিনবার তোপ ধ্বনির আওয়াজ শুনতে পাওয়া যেত। সেই দৈবীক আওয়াজ শুনেই নাকি পশুবলি শুরু হত।

শ্যামরুপা চণ্ডী , ছবি- লেখক।
মেধাশ্রম থেকে গেলাম মহামান্ডলিক  ইছাই ঘোষের আরাধ্য দেবী শ্যামারুপা চণ্ডী মন্দিরে।জনশ্রুতি রাজা লক্ষণ সেন-ও এই মায়ের মন্দির নিয়মিত পুজো দিতে আসতেন।পূজারীর কথা অনুসারে, অতীতের জীর্ণ মন্দিরের উপর এই নতুন মন্দিরটি নির্মাণ হয়েছে। দুর্গা এবং কালী পূজাতে অসংখ্য ভক্ত সমাগম হয়।

একদা এই মন্দিরটি পুনর্নিমান করেছিলেন, বর্ধমানের রাজা। তখন রাজকোষ থেকেই পুজো ও পুরোহিতের দক্ষিণার ব্যবস্থা ছিল। পরে এই মন্দিরটির দায়ভার, বর্ধমানের রাজাদের কাছ থেকে হেতমপুর রাজাদের হাতে ন্যস্ত হয়। হেতমপুর রাজ, গড়জঙ্গলের, বিষ্ণুপুর গ্রামের জনৈক হরিপদ রায়কে দেবোত্তর জমিসহ মন্দিরের পুরোহিত নিয়োগ করেন। উনার বংশধরেরাই এখনও এই মন্দিরের পুজোর পৌরোহিত্য করছেন। তবে বর্তমান মন্দিরটি অর্বাচীন। পুরানো মন্দিরের স্থ্যানেই, এই মন্দির নির্মাণ হয়েছে ১৯৬০ সালে। নির্মাতা ডি এস পির প্রাক্তন উচ্চ আধিকারিক শ্রী করুণা কেতন রায় মহাশয়। বর্তমানে মন্দির গাত্রে প্রোথিত শ্বেত পাথরের দশ ভুজা মূর্তিটি কিন্তু আদি মূর্তি নয়। শোনা যায় ইছাই ঘোষের পূজিত আদি মূর্তিটি স্বর্ণ নির্মিত ছিল। ইছাই ঘোষের মানস কন্যা( পালিত ?)র বিয়ে হয়েছিল শিখরভূম বা পাঞ্চেত রাজ কল্যাণ শেখরের সঙ্গে।  ইছাই ঘোষের মৃত্যুর পরে, কে আর দেবীর পুজো করবে এই আশঙ্কা থেকে নাকি মন্দিরের পুরোহিত মায়ের মূর্তিটি স্থানীয় দীপ সায়রের জলে ভাসিয়ে দেন। আরেকটি মত হচ্ছে, ইছাই ঘোষের মেয়ে জামাই দেবী মূর্তিটি নিয়ে যাবার সময় বরাকর নদীর বানে মূর্তিটি ভেসে যায়। পরে দেবীর স্বপ্নাদেশ অনুসারে রাজা কল্যাণ শেখর মায়ের শিলারূপী মন্দির নির্মাণ করেন। রাজার নামে সেই স্থানের নাম হয় কল্যানেশ্বরী এবং মন্দিরের নাম হয় মায়ের থান বা মাইথন।

তাহলে প্রশ্ন উঠতে পারে গড়জঙ্গলের নাম সেন পাহাড়ি কি করে হয় ? বলা হয় বখতিয়ার খিলজীর নদীয়া আক্রমণের সময়, জ্যোতিষীর পরামর্শে লক্ষণ সেন কোন রকম যুদ্ধ না করে বাড়ির খিরকির দরজা দিয়ে পালিয়ে এসে গড় জংগলে কিছুদিন আত্মগোপন করে ছিলেন। তাই অনেকেই এই জায়গাটিকে সেন পাহাড়ি বলে উল্লেখ করেন। 

 ইছাই ঘোষের মা চণ্ডী বা মা ভবানীর, শ্যামরুপা চন্ডীর নামকরণ নিয়ে অনেক কাহিনী শোনা যায় ।
 কেউ কেউ বলেন তিনি দেবী কালিকা, কেউ বলেন শ্রী কৃষ্ণের রাধিকা। আবার অনেকে বলেন দেবী হচ্ছেন সুক্ষোশ্বরী ,শ্যামলা নামক এক আদিম জনজাতির পূজিত দেবী। তবে পুরোহিত এবং ভক্তদের মুখে প্রচলিত এক জনপ্রিয় কাহিনী আপনাদের জানাচ্ছি । এই নামকরণের সঙ্গে নাকি যুক্ত আছে অজয়ের পার্শ্ববর্তী স্থান জয়দেবের- কবি জয়দেব, রাজা লক্ষ্মণ সেন এবং এক তন্ত্র সাধক কাপালিকের কাহিনী।
রাজা লক্ষ্মণ সেন তখন সেন পাহাড়িতে লুকিয়ে আছেন। উনার সভাকবি জয়দেব আছেন উনার সঙ্গে। আর ইছাই ঘোষের মন্দিরে এক দুরাচারী তান্ত্রিক আশ্রয় নিয়েছেন। মাঝে মধ্যে নাকি সেই তান্ত্রিক মায়ের পুজোর নামে নরবলি দেন।
জয়দেব ও কাপালিকের মধ্যে নরবলি নিয়ে প্রচন্ড কলহ হয়। দুজনেই লক্ষণ সেনের কাছে গিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে নালিশ করেন। কার পুজোতে দেবী খুশি হবেন, সেই নিয়ে দুজনই প্রমান দেবার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলেন। কাপালিকের আকুল আহ্বান সত্ত্বেও পাষান মূর্তির কোন হেলদোল হোল না। কিন্তু জয়দেবের মধুর সংগীতে নাকি দেবীর শিলা মূর্তির মধ্যে কৃষ্ণ ও দেবী চন্ডিকার( লোকমুখে রুপা , দুর্গার এক রূপ) মূর্তি ফুটে ওঠে। কাপালিক পরাজয় স্বীকার করে দেশান্তরী হয়ে যান। লোকমুখে দেবীর নাম হয় শ্যামরুপা চণ্ডী।

সেখান থেকে চললাম গোপরাজ ইছাই ঘোষের দেউল-এ। ধর্মমঙ্গল কাব্যেও ইছাই ঘোষের উল্লেখ আছে। ইছাই ছিলেন গোয়ালা, ছিলেন স্বাধীনচেতা, বিদ্রোহী।নিজের সৈন্যদল তৈরি করেছিলেন- বাউরি, মুচি, হাঁড়ি, বাগদি, ডোম ইত্যাদি সমাজের দুর্বলতম মানুষদের নিয়ে।এদের মনে এখনো বীর ইছাই ঘোষের স্মৃতি জাগরুক।ইতিহাস বলে পাল রাজা মহিপালের সময় রাজ্যের ভাঙ্গনের সূচনা হয়।অনেক সামন্ত রাজারা বিদ্রোহ করেন, যার মধ্যে ইছাই ঘোষ অন্যতম। স্থানীয় রাজা কর্নসেনকে পরাজিত করে, বর্ধমান জেলার এক বিস্তীর্ণ অংশে গড়ে তোলেন গোপভূমি বা ঢেকুরগড়।
ইছাই ঘোষের মৃত্যুর পরে, সম্ভবত পরবর্তী কোন গোপ রাজা, তাঁর স্মৃতির উদ্দেশ্যে, এই অতি চমৎকার দেবালয় বা দেউল টি তৈরি করেন সম্ভবত মাতা ভগবতীর উদ্দেশ্যে।
আবার অনেকের কাছে শুনেছি বর্ধমানের মহারানী বিষ্ণুকুমারী এই মন্দির নির্মাণ করেছিলেন। আবার মন্দির নির্মাতা হিসাবে বর্ধমান রাজ চিত্র সেনের উল্লেখ ও পাওয়া যায়।

ইছাই ঘোষের দেউল, ছবি- লেখক ।
অনেক পরে  এই মন্দিরটির মধ্যে একটি সুবিশাল শিবলিঙ্গ , সম্ভবত কোন স্থানীয় জমিদার রেখে দেন, সেই থেকে  স্থানীয়রা একে শিব মন্দির বলেই গণ্য করে। অবশ্য জমিদার মহাশয় এটিকে শিব মন্দির ভেবে নেওয়ার পিছনে হয়ত কাজ করেছিল, এই দেউল এর মধ্যে কীর্তিমুখ মূর্তির উপস্থিতি। রাক্ষসের মতন দেখতে কীর্তিমুখ কিন্তু  শিব মন্দিরের বিশেষত্ব।স্কন্ধ পুরানে বলা হয়েছে, শিবের আদেশে জলন্ধর রাক্ষস নিজের শরীরকে নিজে গিলে ফেললে, শিব তার নাম নাম দেন- কীর্তিমুখ বা ফেস অফ গ্লোরি।

অনেক পুরাতাত্ত্বিকদের মতে এটি এগারোশ শতকে নির্মিত। তবে শ্রদ্ধেয় বিনয় ঘোষের মতে এটি ষোড়শ বা সপ্তদশ শতকে নির্মিত ।
দেখতে অনেকটা ওড়িশা শিখর মন্দিরের ধাঁচের।মন্দিরটিতে পাঁচটি ধাপ দেখা যায়।তাছাড়া, বিভিন্ন সময়ে সংযুক্তি বা রক্ষণাবেক্ষণের  কাজ হয়েছে বোঝা যায়- আলাদাভাবে বিভিন্ন রকম ইঁটের নমুনা দেখে। অসম্ভব সুন্দর নৃত্যরতা নর্তকী এবং কীর্তিমুখ মূর্তি, এই দেউল এর অন্যতম সেরা কাজ।
ইছাই ঘোষের দেউলের পাশে অজয়ের শোভা ।

সেখান থেকে বেড়িয়ে কিছুক্ষনের জন্য দাঁড়ালাম অজয়ের তীরে। চতুর্দিকে আদিগন্ত বিস্তৃত কাশবনের মধ্যে দিয়ে একফালি নদী তিরতির করে বয়ে চলেছে। আহা! কি হেরিলাম! জন্ম জন্মান্তরেও ভুলিব না।


(প্রয়োজনীয় তথ্য-
কোথায় থাকবেন।- দুর্গাপুর, কলকাতা, শান্তিনিকেতন থেকে খুব সকালে গাড়ি নিয়ে এলে একদিনেই বনকাটি দেখে ফেরা যায়। আঞ্চলিক ইতিহাস জানতে মাস্টার মশাই প্রণব ভট্টাচার্যকে আগে থেকে ফোন করে রাখবেন- 9474375260.
সেক্ষেত্রে গাড়িতে অবশ্যই খাবার ও জল নিয়ে যাবেন।
যদি রাত্রি বাস করতে চান, তবে একমাত্র ও অতি চমৎকার স্থান Deul park, পিন ৭১৩১৫২। অজয় নদের ধারে এই স্থানটি নিজেই একটি চমৎকার দ্রষ্টব্য।পরিবেশ অতি মনোরম, কর্মচারীরা ভদ্র।প্রয়োজনীয় সবকিছুই পাবেন। উপরি পাওনা ইছাই ঘোষের দেউল দর্শন। নেটে বুকিং করতে পারেন। মোবাইল ফোনে যোগাযোগ -9831555594.
আর উৎসব অনুষ্ঠানে বড় গ্ৰুপে  এলে সাতকাহানিয়া নাট্যগ্রামের অসাধারণ পরিবেশেও থাকতে পারেন। ফোন- কল্লোল ভট্টাচার্য, 9434646982.)

তথ্যসূত্র:- 
১) গৌড় কাহিনী, শ্রী শৈলেন্দ্র কুমার ঘোষ। ডি এম লাইব্রেরি, ৪২ কর্ণওয়ালিশ স্ট্রিট, কলকাতা ৬ ।
২)পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি, প্রথম খন্ড, বিনয় ঘোষ। প্রকাশ ভবন, কলিকাতা ৭০০০১২।
৩)মিথ পঞ্চদশ, মন্দিরের মিথ, মিথের মন্দির, কৌশিক দত্ত। পার্চমেন্ট।
৪) গড়ের মা, তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রাম-ডানজোনা, পোষ্ট:- রামপুর, থানা - মহাম্মদ বাজার, জেলা- বীরভূম, ৭৩১১২৭  ।।
৫) বাঙ্গালার ইতিহাস, প্রথম খন্ড, দ্বিতীয় সংস্করণ। শ্রীরাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়  প্রণীত। মনোমোহন প্রকাশনী, কলেজ স্ট্রিট।
৬) INSCRIPTIONS OF BENGAL, NANI GOPAL MAJUMDAR, SANSKRIT PUSTAK BHANDAR. Bidhan Sarani, Kolkata.
৭) শ্রী নবারুণ মল্লিক, ক্ষেত্র-সমীক্ষক, দুমকা, ঝাড়খণ্ড।

10 comments:

  1. অসাধারণ পোস্ট।

    ReplyDelete
  2. খুব ভাল লেখ। ধন্যবাদ।

    ReplyDelete
  3. বাহ। বেশ ভালো হয়েছে।

    ReplyDelete
  4. Sir. it's an impeccable write up. do please provide the details to explore more about the place. awaiting your response at the earliest.

    ReplyDelete
  5. অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে এমন একটি ইতিহাস তুলে ধরার জন্য। বাংলার অনেক শিল্প হারিয়ে যাচ্ছে। সঠিক ব‍্যবস্থা নিলে এ জায়গা ভালো বেড়ানোর জায়গা হয়।

    ReplyDelete
  6. এমন লেখা বিরল। খুব মন দিয়ে পড়লাম। সাতকাহনিয়াতে কি সেচ দপ্তরের বাংলো আছে? জানেন?

    ReplyDelete
  7. এরকম লেখা ভবিষ্যতের সম্পদ। অসাধারণ।

    ReplyDelete
  8. অনেক কিছু জানতে পারলাম,মা জানা ছিলো না।বনকাঠি অযোধ্যার পাশে র গ্ৰামেই আমার বাড়ি জিঞ্জিরা। আশেপাশে র অঞ্চলে তো ছোটবেলায় গোরুর গাড়ি তে করে কতবার গেছি রথ দেখতে,বাঃ মকড সংক্রান্তির মেলায়। কিন্তু তখন এসব তথ্য জানা ছিলো না, তার ঐতিহাসিক ঐতিহ্য অনুধাবন করতে পারি নি।

    ReplyDelete
  9. খুব ভালো লাগলো।🙏

    ReplyDelete